ঢাকা,সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে মাদার ট্রি পাচার

কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজাড়

মো. সাইফুল ইসলাম খোকন, চকরিয়া :: কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ৪টি রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে শত বছরের মাদার ট্রি উজাড়, সংরক্ষিত বন ভূমি জবর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ ও পাহাড় কেটে ইটভাটায় মাটি ও কাঠ সরবরাহ, ছড়া খাল থেকে বালি উত্তোলন ও স’মিলে গিলে খাচ্ছে প্রতিমাসে কোটি টাকার কাঠ।

এসব অনিয়ম দূর্নীতি অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বন কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বল্পতার অযুহাত দেখিয়ে এসব বন বিটে নিয়োগ দেয়া হয়েছে অদক্ষ বন প্রহরীদেরকে। এ সুযোগে বন জায়গিদাররা দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে অনৈতিক আর্থিক লেনদেন করে বনাঞ্চল ধ্বংসের তান্ডব চলাচ্ছে। এ অভিযোগ স্থানীয় পরিবেশ সচেতন জনগনের।

সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা যায়, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ঈদগাও রেঞ্জের ভোমরিয়া ঘোনা, পূর্ণগ্রাম, ফুলছড়ি রেঞ্জের নাপিত খালী, ফুলছড়ি, খুটাখালী, মেধাকচ্ছপিয়া, ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের কাকারা বিটের সংরক্ষিত বন বিটের সংরক্ষিত বনভূমি জবর দখল করে অবৈধ ভাবে নির্মিত হয়েছে শত শত স্থাপনা। বিশেষত ফুলছড়ি রেঞ্জের মেধাকচ্ছপিয়া ও খুটাখালী বিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে শত বছর বয়সী মাদার ট্রি কেটে লম্বা তক্তা হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে অবৈধ ভাবে নির্মিত ফিশিং ট্রলার। ফুল ছড়ি রেঞ্জের ফুলছড়ি বনবিটে পাহাড় কেটে বিরাণ ভূমিতে পরিনত করছে পাহাড় গুলো।

ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের কাকারা বিটের বনাঞ্চলের বৃক্ষের দৃশ্য এখন দেখা যায় না। ইতিপূর্বে সব উজাড় হয়ে গেছে। কাকারা বন বিটের বনাঞ্চলের ভিতরে নির্মিত হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। ওই বিটের বিট কর্মকর্তা শিকলঘাট স’মিল এলাকায় ট্রাক ভর্তি ভারীওয়ালা বাঁশ থেকে অবৈধ লেনদেনে লিপ্ত থাকায় বন ভূমি পাহারা দেয়ার তার সময় নেই।

ফুলছড়ি রেঞ্জের মেধাকচ্ছপিয়া বিটকে বন বিভাগ জাতীয় উদ্যান ঘোষনা করলেও এ পর্যন্ত চোখে দেখা যায় মত কোন উন্নয়ন কর্মকান্ড হাতে নেয় নি। এ বিটে একসময় নারিস বনের মত হাজার হাজার শতবর্ষী গর্জন মাদার ট্রি ছিল। যা বাংলাদেশের কোন বন বিভাগে ছিলনা। এ বিটের শত শত মাদার ট্রি গর্জন গাছ সমুদ্র পথে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া উপজেলার রাজাখালীর আরবশাহ বাজারে নিয়মিত পাচার হচ্ছে।

কক্সবাজার সদর, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় অবৈধ ভাবে নির্মিত হয়েছে কয়েশ স’মিল। এসব স’মিলে স্ব স্ব এলাকার সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী দল ডাম্পার (মিনি ট্রাক) জীপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাখ লাখ টাকার চোরাই কাঠ সরবরাহ করলেও বন বিভাগ এসব কিছু দেখেও না দেখার ভান করছে।

এসব ব্যাপারে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান। ইতিপূর্বে এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে খুটাখালী বিটের বিট কর্মকর্তাকে সার্সপেন্ড করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।

 

পাঠকের মতামত: